অনলাইন ডেস্ক: মাত্র ছয় বছরের ক্যারিয়ারে সর্বাধিক ফ্লপ ছবির বিতর্কিত চিত্রনায়িকা পরীমনির বিলাসী জীবন ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। রাত গভীরে ঢাকার অভিজাত ক্লাবগুলোতে তার উচ্ছৃংখল বিচরণে গণমাধ্যমে শিরোনাম হচ্ছেন। একের পর এক অভিযোগে বিদ্ধ হচ্ছেন ঢাকাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সর্বকালের সেরা সুন্দরীদের অন্যতম এই নায়িকা। জানা গেছে, শুরুতেই দুই ডজন ছবিতে সাইনিং করে বিরল রেকর্ড গড়েন এই নায়িকা। তবে তার খামখেয়ালীপূর্ণ আচরণের কারণে অনেকগুলো ছবির শুটিং শুরুতেই বন্ধ হয়ে গেছে, কোনোটা বা মাঝপথে। এতে করে প্রযোজকরা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও জৌলুসে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠেন পরীমনি।
এরমধ্যে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যেমন গাড়ির মডেল পাল্টেছেন, তেমনি গাড়ির মডেলের মতো পাল্টেছেন প্রেমিক। কারো সঙ্গে দেখার পর মুহুর্তের কিছু সময়ের জন্য মনের লেনদেন পরক্ষণেই মন চাইলো তো বিয়ে। বেশ কয়েকটি বিয়ে করলেও থিতু হননি, ব্যবহার্য্য টিস্যুর মতোই ছুঁড়ে ফেলেছেন সেই সব বন্ধু থেকে স্বামী হওয়া অভাগাদের। তাতে বিন্দু পরিমাণও হৃদয়ে আঁচর পড়েনি পরীমনির। বরং কানপাতলে শোনা যায় গভীর রাতের পরমবন্ধুদের কথা। যারা অর্থ-বিত্ত-ক্ষমতায় খুবই প্রভাবশালী। তাদের ছত্রছায়ায় পরীমনিও হয়ে ওঠেন প্রভাবশালী। এফডিসিতে বছর তিনেক ধরে প্রতি কোরবানী ঈদে তিনটা-চারটা গরুর মাংস বিতরণ করে স্বল্পসময়ে সাধারণ শিল্পী-কুশলীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। গণমাধ্যমও তার এই দানকে বেশ ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছিল, যদিও ঘুনাক্ষরেও প্রশ্নের উদয় হয়নি ফ্লপ নায়িকার অর্থের উৎসের কথা। পরীমনি চলে যান সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে। আচরণে উগ্রতা শুরু থেকেই ছিল তবে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সঙ্গেও সেই উগ্রতা কখনও কখনও কর্তৃত্ববাদী রূপে ধরা দেয়। এসবের কারণে বেশ কয়েকজন বিশেষ বন্ধু দূরে চলে যান। এতে পরী হয়ে ওঠেন আরো বেপরোয়া।
সাগরে উদ্দাম পরীমনি। ছবি: সংগৃহীত
হাতে সিনেমা না থাকলেও ঘন ঘন বিদেশযাত্রা নিয়েও রয়েছে ফিঁসফাঁস। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ঘেঁটে দেখা যায় তাতে উচ্ছৃংখল আর বিলাসী জীবনযাপনের চিত্র। গোটা ৭-৮ যুবক-যুবতীর সার্বক্ষণিক উপস্থিতি, ঘরে মিনি বার (কালেরকণ্ঠ); যে জীবন কেবল বলিউডের একজন প্রথম শ্রেণির নায়িকার হতে পারে।
অনেকে অভিযোগ করে থাকেন জনপ্রিয় নাট্যপরিচালক চয়নিকা চৌধুরীর ‘বিশ^সুন্দরী’ (২০২০) ছবির সময় থেকে পরীর জীবনাচারে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। হৃদিতা হকের ছবির সেটে সাময়িক মোহাবিষ্ট হয়ে ৩টাকায় বিয়ে করেছিলেন এক সহকারীকে। বোট ক্লাব ঘটনায় পরীর পাশে ছায়াসঙ্গী হিসেবে তাকেই দেখা গেছে সার্বক্ষণিক টিস্যু এগিয়ে দিতে। গণমাধ্যমে প্রকাশ ঘটনার রাতেও বনানীর বাসায় চয়নিকার উপস্থিতি ছিল। তাই ধরে নেওয়া যায় ২০২০ এর শুরু থেকে চলমান সময় পর্যন্ত পরীমনির বিভিন্ন ইস্যুতে চয়নিকা চৌধুরী গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র।
এসবের ভীড়ে পরী আলোচনায় এসেছিলেন তার বিলাসবহুল গাড়ির কারণে। গত বছর করোনার প্রকোপে সাধারণ শ্রেণি যখন অপেক্ষায় ত্রাণের ঠিক তখনই তিনি ইতালীয় অভিজাত ফিয়াট অটোমোবাইলসের একটি রয়্যাল ব্লু ম্যাসেরিটি ব্র্যান্ড গাড়ি কিনে সংবাদের শিরোনাম হন (এরআগে তিনি হ্যারিয়ার ব্যবহার করেছেন)। একই বিষয়ে শিরোনাম হয়েছেন খড়কুটো ধরে ক্যারিয়ারে টিকার থাকার সংগ্রামে থাকা অপু বিশ^াস। তা প্রয়োজন হলে গাড়ি কিনতেই পারেন, তবে প্রায় সাড়ে ৩ কোটির টাকার মুল্যের গাড়ির সঙ্গে আয়ের সঙ্গতিও একটা প্রশ্ন। সবার অলক্ষে থেকে গেছে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রশ্ন। কারণ ক্যারিয়ার জুড়ে যার ফ্লপ ছবিতে সয়লাব, বছরে হিসেব কষলে ইনকাম এই সংকটের বাজার কত তা ছোট মুদি দোকানিরাও হিসেব কষে বের করতে পারেন। অথচ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড(এনবিআর) নিরব অজানা কারণে। যদিও একটি সূত্র বলছে সংস্থাটি পরীমনির গাড়ি সংক্রান্ত ব্যাপারে তৎপর হচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্থ হ্যারিয়ার। পাশে নতুন গাড়িতে হাস্যোজ্জ্বল পরীমনি। ছবি : সংগৃহীত
জন্মদিন পালনে পাঁচ তারকা হোটেলে ড্রেসকোড মেনে মহাযজ্ঞের আয়োজন করেন পরীমনি। গণমাধ্যমকর্মীদেরও বাধ্য করেন সেই পোশাক কোড মানতে। কেবল তাই নয়, ড্রেস কোড নিয়ে প্রশ্ন তোলায় জুনিয়র এক সাংবাদিককে নিগৃহের খবরও জানা যায়। জানা গেছে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয় করেছেন তার জন্মদিন উৎসবকে স্বার্থক করে তুলতে। অথচ ছবি প্রতি তিনি পেয়ে থাকেন ৫-৭ লাখ টাকা।
এখানেই থেমে নেই পরীমনি বিভিন্ন সূত্রের প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা গেছে, দেশের বাইরেই তার ডজনখানের ব্যাংক একাউন্ট! স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে যদি এই একাউন্ট তারই হয়, তবে তার আয়ের উৎস কত এবং কতটা বৈধ অথবা ওই একাউন্টে টাকা জমার ছায়া উৎস কারা? যেহেতু তার সঙ্গের বন্ধুরা সমাজের এলিট, ব্যবসায়ী শ্রেণি। গত এপ্রিলে পরীমনির একটা লম্বা ট্যুর ছিল দুবাইতে। সেখানে সবচেয়ে দামি হোটেল, ইয়টে তাকে দেখা গেছে।
” align=
সর্বাধিক ব্যয়বহুল হোটেল ‘আরমানি’-তে রাত্রিযাপন করেছেন (প্রতি রাতে এখানে থাকতে ৬০ থেকে ১ লাখ বাংলাদেশি টাকা ভাড়া)! এর উৎসদাতা কোন একাউন্ট অথবা কারা? প্রতিরাতে ব্যয়বহুল ক্লাবে মদ খাওয়ার অর্থ যোগানদাতাই বা কারা? যদি তার আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামাঞ্জস্য না থাকে তাহলে তিনি আয়কর ফাঁকি দিচ্ছেন। আর এটা হয়ে থাকলে দীর্ঘ এই সময়জুড়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তৎপর হতে দেখা যায়নি এনবিআর-কে। এখন দেখার বিষয় এত ঘটনার পরও কি এনবিআর নিরব থাকবে না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের দুর্নীতিমুক্ত বিশুদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আটঘাট বেঁধে নামবে? কারণ পরীমনির বিরাট সংখ্যক ভক্তরা চায় এসব অভিযোগের প্রকৃত ঘটনা উদঘাট হোক; সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করে তাদের প্রিয় পরীমনি আবার ‘ডানাকাটা’ পরী হয়ে আনন্দের সাগরে তাদের ভাসিয়ে দিক।
প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি
সম্পাদক ও প্রকাশক: শেখ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ
মোবাইল: ০১৭১১-৯০৬৪১৪/০১৬১১-৯০৬৪১৪.(ওয়ার্সআপ) ০১৭৬১৭১৫৭৮৬
প্রধান উপদেষ্টা :এডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিব ।।
পৃষ্টপোষক: সৈয়দ গৌছুল হোসেন//
বাংলাদেশ অফিস:জুলিয়া শপিং সিটি, এম সাইফুর রহমান রোড, মৌলভীবাজার- ৩২০০।
বার্তা সম্পাদক ও ঢাকা অফিস: এম শাহাজাহান মিয়া ৫৬/৪মতিঝিল, ঢাকা, মোবাইল: ০১৮১১-৯৫৫৫১৭।
আমেরিকা অফিস: সৈয়দ গৌছুল হোসেন মোবাইল: +১৬৩১৮০৫৩৭০৯
লন্ডন অফিস:শাহিনুল হক মঞ্জু +৪৪৭৫৩৫৪১৪৬৪১
e-mail : [email protected]/ [email protected]